Hot Post

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

ঘুমের ব্যাপারে সচেতন হউন, সুস্থ থাকুন

ঘুমের ব্যাপারে সচেতন হউন, সুস্থ থাকুন

বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির এই বিশ্বে রাত জেগে থেকে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ফেসবুকিং করা, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামে সময় কাটানো নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা সরাসরি প্রভাব ফেলছে আমাদের শরীর ও মনের উপর। বিশেষ করে প্রভাব ফেলছে আমাদের ঘুমের উপর। বিশেষজ্ঞদের মতে ঘুম থেকে দেরি করে ওঠা শুধু স্বাস্থ্যের জন্য খারাপই না, এই অভ্যাস আমাদের জীবনকে নানান ভাবে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা ভোরে ঘুম থেকে ওঠে তারা দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা লোকদের চেয়ে বেশি সফল ও বেশি সুখী। 

আমরা ভাবি রাত জেগে কাজ করলে আপনি অধিক সময় কাজ করতে পারছেন কিন্তু আপনার শরীর যে ক্রমাগত আপনাকে সিগন্যাল দিচ্ছে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর তা আপনি বুঝতে পারছেন না। শরীর ক্রমাগত তার কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে। 
ঘুমের ছবি


১. ভোরবেলা আমাদের মস্তিষ্ক সব চাইতে দ্রুত ও সঠিক কাজ করতে পারে : ভোরবেলা, পরিবেশ অনেক বেশি শান্তি ও শীতল থাকে। আশেপাশের শব্দ কম থাকে। সব চাইতে বড় কথা হচ্ছে এসময়ে আমাদের মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার মতো জিনিস কম ঘটে থাকে। হাতে সময় থাকে বলে তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে হয় না। খুব শান্তিপূর্ণভাবে নিজের কাজ সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করা যায়। মাথায় নানা ধরনের আইডিয়া আসে। কিন্তু যখন দেরি করে ঘুম থেকে উঠা হয় তখন সবকিছুর জন্য কম সময় হাতে থাকে। ফলে তাড়াহুড়োর সৃষ্টি হবে, যা মস্তিষ্ককে সঠিকভাবে চিন্তা করতে দেবে না। 

২. ভোরবেলা শরীরের এনার্জি সবচেয়ে বেশি থাকে : সারারাত ভালো করে ঘুমানোর পর ভোরে আমাদের এনার্জি পুরো দিনের ও রাতের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ থাকে। যদি দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা হয় তাহলে ভেতরে ভেতরে শরীরটা অনেক দুর্বল অনুভূত হয়। এ দুর্বলতা কাজের গতি অনেকাংশে কমিয়ে দেবে। যার প্রভাব অবশ্যই জীবনের ওপর পড়বে।

৩. নিজের ব্যক্তিগত কাজগুলো করার জন্য সকাল সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ সময় : ঘরে নানা কাজ জমিয়ে রেখেছেন? সপ্তাহের বন্ধের দিনটিতে কাজগুলো করেন? কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন কি ৬ দিনের জমিয়ে রাখা কাজ একসঙ্গে ১ দিনে করা কতোটা কঠিন ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। দিনের কাজ দিনে করে ফেললে ঝামেলা এতো বাড়ে না। উল্টো বন্ধের দিনেও খানিকটা সময় পাওয়া যায় যা অন্য কাজে খাটাতে পারেন। সফল মানুষেরা কিন্তু এ কাজটিই করেন। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে নিজের কাজগুলো সেরে ফেলেন এবং এতে করে ছুটির দিনে অন্য কাজে মন দিতে পারেন।

৪. ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে সারাদিনের কাজের সময়সূচী তৈরি করুন : আপনি যখন সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন তখন আপনার হাতে সময় কম থাকে। তখন নানা কাজের তাড়াহুড়োয় শুছিয়ে কাজ করা হয়ে উঠে না। পুরো দিনটিই কেমন যেনো এলোমেলো হয়ে যায়। ভোরে ঘুম থেকে উঠে যখন আপনার হাতে সময় থাকে তখন ঠাণ্ডা মাথায় পুরোদিনের কার্যসূচী তৈরি করা যায়। দিনের প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে পারেন। এতে করে কাজে সফলতা আসার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।

৫. শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করে ভোরে ঘুম থেকে ওঠা : আপনি লক্ষ্য করেছেন কি, ভোরে ঘুম থেকে ওঠা রাতে ঘুমাতে যাওয়া সবই একটি সার্কেলে বাঁধা? আপনি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে রাতে ঘুমুতে যাবেন তাড়াতাড়ি এবং যেহেতু সারাদিন অনেক ব্যস্ততার মধ্যে কাটাবেন সুতরাং ঘুমটাও বেশ ভালো হবে। আর রাতে ভালো ঘুম হওয়া আমাদের শরীরের জন্য সবচেয়ে ভালো একটি কাজ। শরীরের ইমিউন সিস্টেম উন্নত রাখতে বিশেষভাবে কাজ করে রাতের ভালো ঘুম। এছাড়াও যখন ভোরে ঘুম থেকে উঠবেন তখন হাতে সময় থাকবে এবং খানিকটা ব্যায়াম করতে পারবেন। এতেও
শারীরিক সুস্থতা বাড়বে। শরীর সুস্থ থাকলে তার প্রভাব আপনার কাজেকর্মে এবং জীবনে পড়বে। আপনি অনেক বেশি সক্রিয় হবেন এবং অনেক এনার্জি থাকবে আপনার মাঝে ।

আসুন আমরা অকারণে রাত জাগা বন্ধ করি। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করি। নিজ নিজ ধর্ম মতে প্রার্থনা করি।

লেখাটিঃ আজীবন সুস্থ থাকতে কী খাবেন কী করবেন, বই থেকে নেওয়া হয়েছে।
লেখকঃ ডা. এম. এ. হালিম ও ডা. রেহানা আক্তার
বইটি আপনারা রকমারিতে পাবেন। স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য বইটি পড়তে পারেন।

Post a Comment

0 Comments